পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিভেন উইলিয়াম হকিং আর নেই। বুধবার সকালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে নিজ বাড়িতে এই মহাজীবনের মহাপ্রয়াণ ঘটে। এসময় তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সমকালীন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের বিস্ময় হকিং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসিয়ান অধ্যাপক ছিলেন (স্যার আইজ্যাক নিউটনও একসময় এই পদে ছিলেন)। ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর তিনি অবসরে যান। তবে এরপর তিনি কেমব্রিজের গনভিলি ও কেয়াস কলেজের ফেলো হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
মোটর নিউরন রোগ এমায়োট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস বা এএলএসে আক্রান্ত হয়ে শারীরিকভাবে অচল ছিলেন তিনি। এ রোগে ক্রমাগতভাবে অচল হওয়া সত্ত্বেও বহু বছর ধরে তিনি সাফল্যের সঙ্গে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন।
এই মহাজীবনের মহাপ্রয়াণের খবর জানিয়ে এক বিবৃতিতে তার সন্তান লুসি রবার্ট ও টিম বলেন, প্রাণপ্রিয় বাবাকে হারিয়ে আমরা শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছি। তিনি ছিলেন একজন বড়মাপের বিজ্ঞানী ও অসাধারণ মানুষ। তার কাজ ও গ্রহণযোগ্যতা বহু বছর ধরে টিকে থাকবে। তার সাহস ও কাজ পৃথিবীর বহু মানুষকে উৎসাহিত করেছে। আমরা তাকে চিরকাল মনে রাখব।
পদার্থবিজ্ঞানের এই মহাবিস্ময়ের জন্ম ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি। পদার্থবিজ্ঞানে হকিংয়ের দুটি অবদানের কথা সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত। প্রথম জীবনে সতীর্থ রজার পেনরাজের সঙ্গে মিলে সাধারণ আপেক্ষিকতায় সিংগুলারিটি সংক্রান্ত তত্ত্ব। হকিং প্রথম অনিশ্চয়তার তত্ত্ব ব্ল্যাক হোল-এর ঘটনা দিগন্তে প্রয়োগ করে দেখান যে ব্ল্যাক হোল থেকে বিকিরিত হচ্ছে কণা প্রবাহ। এই বিকরণ এখন হকিং বিকিরণ নামে (অথবা কখনো কখনো বেকেনস্টাইন-হকিং বিকিরণ) অভিহিত। প্রায় ৪০ বছর ধরে হকিং তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের চর্চা করছেন। লিখিত বই ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির থেকে হকিং একাডেমিক জগতে যথেষ্ট খ্যাতিমান হয়ে উঠেছেন। তিনি রয়েল সোসাইটি অব আর্টসের সম্মানীয় ফেলো এবং পন্টিফিকাল একাডেমি অব সায়েন্সের আজীবন সদস্য। ২০১৪ সালে তাঁকে নিয়ে একটি মুভি তৈরি হয় নাম ’থিওরি অব এভরিথিং’।