ঘরের জিনিস ঘরে রাখা যায় না
তোমাকে ডাস্টবিনে না ফেলে
ওয়াশরুমের ফ্লাশের জলে রেখে যদি বা তোমাকে
. —দূর করা যেতো
তাহলে কী আরাম পেতাম!
তোমাকে তো ফ্লাশ করে একনিমিষে
দূর করা সম্ভব নয়—
. তুমি ওজনদার ও ভারী
তুমি অদ্রবণীয় জগদ্দল!
তুমি এক জমাট পিণ্ডহৃদপিণ্ড নেই!
ফ্লাশ করার আগে
টুকরো টুকরো করে ভাঙা দরকার
পাতলা ও লঘু করে গলানো জরুরি!
যত দ্রুত যাও—তত মঙ্গল
সুয়ারেজের জলও অপেক্ষায় আছে—
তোমাকে তো ঘরে রাখা যাচ্ছে না এখন
কখনো কখনো ঘরের জিনিস
. ঘরে রাখা যায় না!
অঙ্কুরের সই
আত্বগ্লানি শোকের মাতম
. বিলাপধ্বনি!
আর কতকাল?
দুখের পাথর
. জীবনভূমির
. বুকচাপা-খনি!
দেখতে দেখতে
হারিয়ে ফেলবো
. সুখেরও হাসি!
. হাতে নে’য়া বাঁশি!
হৃদয় জুড়ানো
. আনন্দ-স্রোত
বইবে না কেন
. অন্তঃসলিলে?
মুক্তির কথা
লেখা তো রয়েছে
. রক্তদলিলে!
নিজেও সুস্থ
স্বপ্ন্-নিরোগ
পরিপুষ্ট!
. —হারাই গ্লানি
দূরে ঠেলে দেই
চারদিকে থাকা
থিতু-ভ্রষ্ট!
মেদামারা নই
. ডগমগে হই
রৌদ্রালোকিত
. অঙ্কুরের সই!
ঘৃণার উৎসভূমি
লাথি মেরে যে জিনিস ফেলে দেই—
তা আবার হাত দিয়ে তুলি না কখনো!
. কিছু কিছু জিনিসের প্রতি
. আমারও সহজাত ঘৃণা!
মা-গো তুমি জানো—
. কেন এই ঘৃণা?
তোমার শিকেয় রক্ষিত ঘি
আমাদের পাওয়ার কথা ছিল—আমরা পাইনি!
লুণ্ঠনের রাতে—
রক্তাক্ত হয়েছো! এখনো তোমার কান্না!
রান্না করা ভাতে—
. কারা মুখ দেয়?
কারা হাত দেয় তোমার ঘরের তাঁতে?
মা-গো জানো তুমি—
. আমার ঘৃণার উৎসভূমি!
গান উৎসব
পৌষমাসে রাত জেগে গান শুনতে যাই
. গান উৎসবে!
মনের কৃত্রিম চাপটুকু পাট পচানো পানিতে
ডুবিয়ে ডুবিয়ে—
সোনালী আঁশের মত মনটাকে চকচকে করি
আশ্রয়স্থল তো শেষমেশ এই মন!
ঠাসাঠাসি চাপাচাপি গাদাগাদি কষ্ট
. আমারও আছে—
জাঁতাকলে নিয়ে আমাকে আরও পেষে
. বিরূপ সময়!
নিজেকে বিক্রয় করে মুনাফার টাকা
শুধু ব্যাংকে রেখে—
. ঋণখেলাপির পকেট ভারী করবার
. কোনো মানে হয় না!
তার চেয়ে পৌষমাসে শিশিরের ঘাসে দু’পা রেখে
কিছুদূর হাঁটি—
. গিয়ে বসি গান উৎসবে!
মা আমার
সরল বালিকা—মা আমার
মুগ্ধ হও! বশীভূত হয়ে পড়ো না হঠাৎ!
আত্মহারা হয়ে আত্মসম্মানের জাফরান বন
তছনছ করতে দিও না!
. —মহুয়াবনেও লুকিয়ে রয়েছে
লালা নিয়ে এক ধরনের কীট!
মুচকুন্দও মুচকি হেসে
. মোহগ্রস্ত করে—
ইটভাটায় তুলতে পারে ও পোড়াতে পারে।
মা আমার—মূর্ছনায় মূর্ছা গিয়ে
নিজের শেকড় নিজে তুলে নিজের ভূমিতে
ভূমিহীন হয়ে পড়ো না!
আমাদের পুত্র
জোনাক পোকার উজ্জ্বলতা আছে
তোমার ঔজ্জ্বল্য কই?
পাশের চিকন নদীটির স্রোত আছে
. তোমার তো গতি নেই!
প্রত্যাবর্তন করার সময় হয়েছে—
সমুদ্রের কীটও তার হাড় থেকে
প্রবালের জন্ম দেয়,
. আর তুমি আমাদের পুত্র!
তোমার জন্মের সাথে সাথে
বিস্ময় ও আনন্দ জেগেছিল!