সাহিত্য ও নজরুল-গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ নজরুল একাডেমির ‘নজরুল পুরস্কার’ পেলেন বিশিষ্ট কবি ও গবেষক ড. তপন বাগচী। রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যায় আসানসোল জেলার চুরুলিয়ায় নজরুলজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তপন বাগচীর হাতে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাধন চক্রবর্তী এই পুরস্কার তুলে দেন।
নজরুল একাডেমির সভাপতি ড. প্রশান্তকুমার দেসরকারের সভাপতিত্ব এ সময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শ্রম বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. নির্মল মাজি, দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র দিলীপ অগাস্থি, একাডেমির সম্পাদক কাজী রেজাউল করিম, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল চর্চাকেন্দ্রের পরিচাল ড. স্বাতী গুহ, নজরুল-বিশেষজ্ঞ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
কবি তপন বাগচীর জন্ম ২৩ অক্টোবর ১৯৬৮ সালে, মাদারীপুর। তার পিতা তুষ্টচরণ বাগচী; মাতা জ্যোতির্ময়ী বাগচী। নজরুলবিষয়ক তার দুটি গবেষণাগ্রন্থ রয়েছে। এগুলো হলো, ‘নজরুলের কবিতায় শব্দালঙ্কার’ ও ‘নজরুলসাহিত্যের কমালোচিত প্রসঙ্গ’। এছাড়া ‘অদ্বিতীয় নজরুল’ ও ‘কাজী মোতাহার হোসেনের নজরুলচর্চা’ নামে দুটি গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন তিনি। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত নজরুল-রচনাবলির শেষ ৪ খণ্ডের প্রকাশনা সমন্বয়ের দায়িত্বও পালন করেছেন এই কবি-গবেষক।
তপন বাগচীর আগে কবি আবদুল কাদির, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও রফিকুল ইসলাম, শেখ লুৎফর রহমান, ফেরদৌসী রহমান, তালিম হোসন, আতাউর রহমান, ফিরোজা বেগম, আসাদুল হক, আবদুল মান্নান সৈয়দ, খালিদ হোসেন, সুধীন দাশ, অনুপম হায়াৎ, ফাতেমাতুজ জোহরা, সালাউদ্দীন আহমেদ, বাবু রহমান, ফেরদৌস আরা, সুজিত মোস্তাফা, রশিদুননবী প্রমুখ শিল্পী ও গবেষক এই পুরস্কার লাভ করেছেন।
তপন বাগচীর জন্ম মাদারীপুরে ১৯৬৮ সালে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় এমএ ও পিএইচডি করে তিনি বেশ কিছুকাল সাংবাদিকতা করেছেন। নজরুলগবেষণা ছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতাগ্রন্থ: শ্মশানেই শুনি শঙ্খধ্বনি, কেতকীর প্রতি পক্ষপাত, অন্তহীন ক্ষতের গভীরে, সকল নদীর নাম গঙ্গা ছিল। প্রবন্ধগ্রন্থ: সাহিত্যের এদিক-সেদিক, সাহিত্যের কাছে-দূরে, চলচ্চিত্রের গানে ডক্টর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, লোকসংস্কৃতির কতিপয় পাঠ, বাংলাদেশের যাত্রাগান : জনমাধ্যম ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত, মুক্তিযুদ্ধে গোপালগঞ্জ, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ : চন্দ্রাহত অভিমান, নির্বাচন সাংবাদিকতা, তৃণমূল সাংবাদিকতার উন্মেষ ও বিকাশ। নজরুল পুরস্কারের আগেও তিনি পেয়েছেন অগ্রণী ব্যাংক শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০১৫), সাংস্কৃতিক খবর পদক (কলকাতা, ২০১৩), মাইকেল মধুসূদন পদক (২০১২), সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সাহিত্য পুরস্কার (২০০৯), মহাদিগন্ত সাহিত্য পুরস্কার (কলকাতা ২০০৮), এম নূরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০০৮), জেমকন সাহিত্য পুরস্কার (২০০৮), অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতি পদক (২০০৮), জসীমউদ্দীন গবেষণা পুরস্কার (১৯৯৬), মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১)। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাধন চক্রবর্তী বলেন, তপন বাগচী মতো গুণী গবেষকের হাতে এই পুরস্কার তুলে দিতে পেরে ধন্য হয়েছি।