এক.
কবিকে জানতে হলে তার বোধকে জানতে হয়, সেই বোধ জানার অন্যতম মাধ্যম হলো তার নির্মাণ বা কবিতা। কবিতার ভেতর দিয়েই তাকে জানার এই কৌশলটি আমাদের কাছে এখনো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সমর চক্রবর্তীর ‘সমর চক্রবর্তীর কবিতা’ শিরোনামের গ্রন্থটির পাঠে তার কাব্যবোধ ছোঁওয়ার একটা সাহসিক প্রচেষ্টা করবো মাত্র। ‘সমর চক্রবর্তীর কবিতা’ গ্রন্থে তার অগ্রন্থিত কবিতাগুলো ‘যে যার গন্তব্যে একা’ শিরোনামে সূচিভুক্ত করেছেন। এছাড়া তার পূর্ব-প্রকাশিত ৭টি কবিতাগ্রন্থ থেকে নির্বাচিত কবিতাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই বইয়ে।
দুই.
সমর চক্রবর্তীর কবিতার পাঠ নিতে নিতে যে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়, তা হলো, তার কবিতার ভাষা সহজ, সাবলীল ও প্রাণবন্ত। কোনো জটিলতা নেই। সমর চক্রবর্তী তার এই কাব্য ভাষার ভেতর দিয়ে জীবনবোধকে নানাভাবে প্রস্ফূটিত করার জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। মূলত জীবনবোধই সমর চক্রবর্তীর কবিতার মূল উপজীব্য। জীবনকে নানাভাবে পর্যবেক্ষণ করা তার একধরনের নেশা। জীবনবোধকে তিনি একধরনের শূন্যতাবোধ ও আত্মমগ্নতার ভেতর দিয়ে অনুসন্ধান করে চলেছেন কবিতার মধ্যে। এছাড়া তার কবিতায় প্রেম, প্রকৃতি, ইতিহাস, দ্রোহ ও নিপীড়িত মানুষের জন্যে প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছে কখনো কখনো। এখানেও জীবনবোধের প্রচ্ছদ ভেসে উঠেছে অবলীলাক্রমে।
তিন.
সমর চক্রবর্তীর কবিতা মন্ময়তায় আচ্ছন্ন। এই কথা তার শূন্যতাবোধ ও আত্মমগ্ননির্ভর কবিতাগুলোর চেহারার মধ্যে উৎকীর্ণ হয়ে ওঠে। সমর চক্রবর্তীর কবিতায় শূন্যতাবোধ খুব পরিচ্ছন্নভাবে উঠে এসেছে। এই শূন্যতাবোধ যেন কবি’র ব্যক্তিগত। কবিমাত্রই ব্যক্তি শূন্যতাকে কবিতায় নানানভাবে আবিষ্কার করেন এবং এই শূন্যতাবোধ কখনো কখনো সর্বজনীন হয়ে ওঠে। সমর চক্রবর্তী তার শূন্যতাবোধকে কিভাবে আবিষ্কার করেন, এমন কয়েকটি কবিতার দৃষ্টান্ত দেখা যেতে পারে। ১. শূন্যতার মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করি ‘আমি’/ ষড়ঋতুর ময়দানে আহা আমিও একদিন ঝরা জামরুল পাতা। (ঝরা জামরুল পাতা)। ২. মহাশূন্যতাকে ভাঙতে পারে না কেউ/তুমি বড়জোর উল্কার মতো ঝরে পড়বে (বিস্ফোরণের পর)। ৩. শূন্যতা আমার মধ্যে এক সত্যপাখির পুনরুত্থান ঘটায় (সেভিং মিররের সামনে)। ৪. এই যে গভীর নির্জনতা তার মধ্যে জেগে আছে অমীমাংসিত এক/সংশয় আজ যা চরম সত্য, আগামীকাল সহাস্যে তাকে দিতে/ হয় বিদায়! (গভীর নির্জন)। ৫. শূন্যবোধের পেয়ালায় জীবনের ব্যাসার্ধ মেপে যায় প্রলম্বিত/অদৈর্ঘ্য অন্ধকার!(গার্হস্থ্য গল্প)। ৬. জীবন তো সময়েরই ভগ্নাংশ, অবশিষ্ট/সে এক ভারী পারদ পাথর, শূন্যে ওড়ে না (সময়ের ভগ্নাংশ)। দৃষ্টান্তকৃত প্রতিটি কবিতায় তার নির্জনতা এবং শূন্যতাবোধ স্পষ্ট। ‘শূন্যতা আমার মধ্যে এক সত্যপাখির পুনরুত্থান ঘটায়’ এই সর্বজনীন সত্যের উপলব্ধি ক’জন সহাস্যে তুলে ধরতে পারেন বোধ্যগম্য নয়। সমর চক্রবর্তী তা পেরেছেন।
পৃথিবীর এই কোলাহলের ভেতর দিয়ে দিনযাপনের অংশীদারী হয়েও কবি দীর্ঘজীবন প্রকৃতির সংসারে একা বৃক্ষ হয়ে থাকতে চায়। এতে তার প্রকৃতিপ্রেম গভীর তাৎপর্য হয়ে ওঠে পাঠকহৃদয়ে।
কবিমাত্রই আত্মকেন্দ্রিক। আত্মমগ্নতা আধুনিক কবিতার অন্যতম একটি লক্ষণ। সমর চক্রবর্তী একজন আধুনিক কবি এই কথা অকপটে বলা যেতে পারে। কবি যত বেশি আত্মমগ্ন তার কবিতা তত বেশি প্রগাঢ় জীবনবোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কেননা কবিতা জীবনেরই অংশ। এজন্য সহজেই বলা যায়, জীবনের জন্য কবিতা কিংবা কবিতার জন্য জীবন। সমর চক্রবর্তীর আত্মকেন্দ্রিক উচ্চারণগুলো যেকোনো মানুষের জীবনকে একান্ত করে ভাবনার সৃজন জোগাবে এবং মানুষ মাত্রই যে একা এই চিরন্তন বোধকে নতুনভাবে ভাবিয়ে তোলে। এমন কয়েকটি কবিতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরা যাক। ১. নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে অতিক্রম করছি /দূরের দুর্গম সীমান্ত (তাঁতকল)। ২. আমার ভ্রামণিক পা হাঁটতে হাঁটতে তৈরি করছে অসংখ্য নতুন সড়ক/এখন পা দুটোকেই আমার ভ্রমণের গন্তব্য ভাবছি (আমার গন্তব্য)। ৩.আমি সময়ের পাশে নীরব এক ফুলগাছ;/ বহুবর্ণের মধ্যে স্ববর্ণ হয়ে দীর্ঘজীবন ফুটে আছি (সময়ের পাশে ফুলগাছ)। ৪. রক্তের নিঝুম দ্বীপে মানুষ কখনো কখনো একা! (দিগন্তের স্বপ্নারোহী)। ৫. মানুষ নিজেই নিজের শ্রেষ্ঠ আশ্রয় (শ্রেষ্ঠ আশ্রয়)। এমন একটি পঙ্ক্তির পর কবি’র এই আত্মনিমগ্নতা সব মানুষের আত্মনিমগ্নতার প্রতিনিধিত্ব করছে বলেই প্রতীয়মান।
চার.
প্রেম শাশ্বত ও চিরন্তন। প্রতিটি মানুষের ভেতরই প্রেমবোধ জাগ্রত হতে বাধ্য। প্রেম নেই মানবহৃদয়ে এমনটি ভাবাই যায় যায় না। প্রেম আছে বলেই মানুষের সঙ্গে মানুষের মমতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। সমর চক্রবর্তীর কবিতার ভেতরেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। কারণ সমর চক্রবর্তীও আধুনিকতাকে গ্রহণ করেছেন। তার প্রেমের কবিতাগুলোর মাঝে দার্শনিক ভাবনা এবং একধরনের বোঝাপড়ার টানাপড়েন লক্ষ করা যায়। উদাহরণ হিসেবে কয়েকটি কবিতার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করছি। ১. তোর ভেতর আমার একজন আমি থাকে। ২. আমি কোন সম্পর্কের সংজ্ঞায় যাব না; যেহেতু তুমি/কার্যকারণ সম্পর্ক মেনে জীবন এবং প্রযুক্তি বোঝো (সম্পর্কের সংজ্ঞায় যাব না)। ৩. মানুষ মহাপ্রেম, সে বড় নিষ্ঠুর/স্বপ্নভূক এ সৌন্দর্যের বিবরণ কিছু নাই/পৃথিবীতে যত রূপ, আত্মার তত আয়োজন (মানুষ)। ৪. মহা-অন্তর, কী সে মহামায়া ঝুলে আছে প্রেমে পৃথিবী! কেন এত/ রূপ আয়োজন, সবকিছুই কি পৃথিবীর মানুষের প্রয়োজনে? নাকি/মহাবিশ্বে অদৃশ্য ঘিরে আছে নামহীন আরও পৃথিবী? (অমাপ্ত কবিতার কান্না)। ৫.পৃথিবীর সমান বয়সী আমার প্রেম, তোমাকে কেন্দ্র করে /কেন্দ্রীভূত বিন্দু আমি ছুঁয়ে আছি সময়, দুঃসাহসে (কেন্দ্রীভূত আমি)। ৬. নৈঃশব্দ্যের আর্তনাদে শব্দের হাসি ঝরে পড়ে কান্নায়, তোমার/হৃদয়ভ্রমণে বহু-বৃত্ত -ব্যাসার্ধ উড়ে দেখেছি, পৃথিবীতে সত্যের/ মতো আর কোনো সুন্দর প্রেম নেই (সত্যের মতো সুন্দর প্রেম নেই)। এই যে, ‘পৃথিবীতে সত্যের /মতো আর কোনো সুন্দর প্রেম নেই’ ঠিক এরূপ প্রেমই কবি’র আরাধ্য। এই প্রেমরূপই শাশ্বত প্রেম এবং চিরন্তন প্রেমের রসদ গ্রহণ করে মানুষ।
পাঁচ.
জীবনানন্দ দাশকে মূলত প্রকৃতির কবি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জীবনানন্দ দাশ এই সময়ে দাঁড়িয়ে যখন অন্যতম একজন আধুনিক কবি হিসেবে সর্বজনগৃহীত। ঠিক এই সময়েও সমর চক্রবর্তীর কবিতায় একধরনের প্রকৃতির সন্ধান খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও এই প্রকৃতিনির্ভর কবিতায় তার স্বকীয়তাই প্রকাশ পায়। আর এখানেই কবির সার্থকতা। তার কবিতা পাঠে এক ধরনের নির্জনতা অনুভব করা যায়। সেই নির্জনতা পুরোপুরি জীবনানন্দের কবিতার মতো প্রকৃতিনির্ভর নির্জনতা না হলেও ব্যক্তি নির্জনতার উন্মেষ লক্ষণীয়। সমর চক্রবর্তী প্রকৃতি-নির্ভরতার মধ্যে দিয়েও জীবনকে নানানভাবে উপলব্ধি করেছেন। কারণ মানুষই প্রকৃতির আয়না। প্রকৃতির সন্তান বৃক্ষকেই কবি শিক্ষক ভাবতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। প্রকৃতিনির্ভর কয়েকটি কবিতা আমাদের তার প্রকৃতিপ্রেমকে বুঝতে সহায়তা করবে। এমন কয়েকটি কবিতার পঙ্ক্তি তুলে ধরছি। ১. আমার কোনো রূপ নাই, ধারণ করি সৌন্দর্য, মহারূপ প্রকৃতির (স্বরূপ সন্ধানে)। ২. শূন্য থেকে মহাশূন্যের ধারণা বড় করে সংখ্যা প্রশ্ন; রহস্য সন্ধানে গিয়ে দেখি/শূন্য স্বজ্ঞান; মানুষ প্রকৃতির আয়না (মানুষ প্রকৃতির আয়না)। ৩. দীর্ঘজীবন প্রকৃতির সংসারে একা বৃক্ষ, বিমূর্ত/ বীজের শূন্যতায় মূর্ত হয়ে আছি! (বৃক্ষ)। ৪. আমি একা, প্রতিক্ষণ একা, মগ্নজীবনের সবুজ গুহায়/ সকল হৃদয়েরই একটি গোপন গুহা থাকে (রমণী রঙের পৃথিবী)। ৫. ও ফুলগাছ, নিরক্ষর ফুলগাছ/আমার শিক্ষক বৃক্ষ/কী বিষণ্ন শরীরে বয়ে বেড়াও প্রাণ (নিরক্ষর ফুলগাছ)। পৃথিবীর এই কোলাহলের ভেতর দিয়ে দিনযাপনের অংশীদারী হয়েও কবি দীর্ঘজীবন প্রকৃতির সংসারে একা বৃক্ষ হয়ে থাকতে চায়। এতে তার প্রকৃতিপ্রেম গভীর তাৎপর্য হয়ে ওঠে পাঠকহৃদয়ে।
তার কবিতার একটি পঙ্ক্তি দিয়ে শেষ করছি—‘আমিই তো কাঠের মানুষ, ঠাঁটের পাখিই।’ এই পঙ্ক্তিতেই বোঝা যায়, মানুষ ও পাখির এই রূপান্তর আলাদা কোনো এক কাব্যজিজ্ঞাসার পথে কবিকে হাঁটাচ্ছে নিরন্তর।
রবীন্দ্রনাথ অবশ্য অনেক আগেই বলেছেন, ‘বৃক্ষ সে তো আধুনিক।’ সে সূত্রে সমর চক্রবর্তীর এই কাব্যচিন্তাকে আমরা আধুনিক শিল্পরুচিবোধে বাঁধতে পারি সন্দেহ নেই।
ছয়.
‘নিসর্গ অনূদিত কণ্ঠ’—গ্রন্থের দীর্ঘকবিতাগুলো পাঠ নিতে নিতে ভিন্ন এক জগৎ নির্মাণের ভেতর দিয়ে কবি’র কাব্যশক্তির পরিচয় মেলে। কবি’র নিবিড় পঠন-পাঠন, অভিজ্ঞতা, মেধা আর চিন্তা বিকাশের ভেতর দিয়ে বাংলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ইতিহাস ও জীবনগল্পের অসাধারণ রূপায়ন ঘটেছে কবিতায়। সমর চক্রবর্তী-র দীর্ঘকবিতাগুলোর মধ্যে—আমার ঠাকুরমা এক মৎস্যগন্ধা নদী, বঙ্গ নগরীর বাউল আকাশ, বঙ্গীয় আত্মার শ্যামলগ্রাম কিংবা বাবার স্বপ্ন শিরোনামের দীর্ঘকবিতাগুলো অনবদ্য এবং সময়ের রচিত এক একটি শিহরণ। দীর্ঘকবিতা থেকে কয়েক পঙ্ক্তি তুলে ধরছি। ১. ঠাকুরমা প্রাচীর ঘেরা প্রত্নতাত্ত্বিক তুণভূমি আমার (আমার ঠাকুরমা এক মৎস্যগন্ধা নদী)। ২. বঙ্গ নগরীর বাউল আকাশে/কালের সুতোয় ওড়ে/চর্যার হরফ ঘুড়ি/তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে জেগে ওঠে নব্বান্নের চাঁদ/ঘাম-কামের সন্তগ্রামে (বঙ্গ নগরীর বাউল আকাশ)। ৩. বাবার দীর্ঘশ্বাসের ভাঁজ খুলে এখন শুধু স্বপ্নপোড়া গন্ধ পাই/জীবনের ভাঁজ খুলে তার জীবনপোড়া গন্ধ পাই/বাবাকে প্রতিদিন দৃশ্যের ভেতর অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখি (বাবার স্বপ্ন)। ৪. ধ্বংসের দুঃশাসন হতে সোনার সিংহাসন লোভে আসিনি আমি/সৃষ্টি লোভে বারবার জন্মেছি এ বাংলায়, আমি শান্তির দূত/শে খ মু জি বু র র হ মা ন (পিতার অনূদিত কণ্ঠ: এসেছি শান্তির দূত) /প্রাচীন পাণ্ডুলিপির মতো আমার ঠাকুরমার মুখ (আমার ঠাকুরমা এক মৎস্যগন্ধা নদী) ৫. কৃষক সন্তান আমি জঠরে স্বপ্নের পোড়া দাহ/বাঙালি মরমি প্রাণ, শোকে বীরত্বগাথা (উদ্ভিদের ভাষাবিজ্ঞান)। ৬. বাঁকবদলের মহাচিহ্নে রেখে যায় নদী, বুকে তার/গড়ে ওঠে রূপান্তরিত জনপদ (রূপান্তরিত জনপদ)। ৭. কোন আগন্তুক নই, আমি কালের চাকা (যাপনসত্য)। ইতিহাস তো কালের চাকার মতো চলমান। একথা স্বীকার্য যে, সমর চক্রবর্তী আমাদের সেই দিকেই দাবিত করেছেন ইতিহাসরে প্রতি দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে।
সাত.
সমর চক্রবর্তীর কবিতায় সহজ ও সাবলীল ভাষাচেতনা স্পষ্ট। এই ভাষাশৈলী একান্ত। এই সাবলীল ভাষা দিয়েই তিনি কবিতায় জীবনবোধকে নির্মাণ করার জন্যে সচেষ্ট থেকেছেন নানান আঙ্গিকে। যেখানে শূন্যতা ও আত্মকেন্দ্রিকতা প্রধান আশ্রয় হয়ে উঠেছে। কবিতার দীক্ষিত পাঠকমাত্রই এই কাব্য ভাষাচেতনার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সমর চক্রবর্তীর কবিতার জীবনবোধকে সহজেই উপলব্ধি কিংবা উন্মোচন করতে পারবেন নির্দ্বিধায়। তার কবিতায় জীবনবোধ এসেছে অস্তিত্বের প্রয়োজনে। এছাড়া প্রকৃতি, প্রেম, দ্রোহ ও ইতিহাস চেতনার ভেতর দিয়ে তার কবিতা একধরনের কাব্যজিজ্ঞাসার সম্মুখীন হয়ে উঠেছে। যেখানে জীবনবোধের প্রাধান্যই প্রধান। তার কবিতার একটি পঙ্ক্তি দিয়ে শেষ করছি—‘আমিই তো কাঠের মানুষ, ঠাঁটের পাখিই।’ এই পঙ্ক্তিতেই বোঝা যায়, মানুষ ও পাখির এই রূপান্তর আলাদা কোনো এক কাব্যজিজ্ঞাসার পথে কবিকে হাঁটাচ্ছে নিরন্তর।