কবি ও রাখাল
বন্ধ চোখে ভাসাই ঘুম-ডিঙ্গিভরা জলে
আলোতে খুব, ঝরোকা হাওয়া বয়,
উঠোনে সেই, তারকা লতা, বন্য জুঁই
উল্টাসিধা পাঠ করি যে, উল্কি চালে,
হাতের ছোঁয়া কাঁপছে তবু অনুরাধার নামে
বিপুল বনে ঐ যে কাটা মেহেদি-ঘেরা ঘাস
চোখের গোলে তেলবিহনে জ্বলেছে তারা
সলতে মোমে, উজালা যেন বাসর ঘর
চোখের দোষে অন্ধ কেউ, কেউবা চোর
প্রতিবেশীর ছলে,
পকেট কেটে চুরি যে যায়, স্বপ্ন-তোড়া
শুভ্র চাদর শুয়ে থাকে একা যে এক শয্যা
বিরামহীনে ভিন্ন মাত্রা,শূন্যতায় স্বরচিহ্ন
অনভিজ্ঞ হোক না আজ বিপুল পরিসরে
অন্ধকার এক যাত্রাপথে চমৎকার সেই চিত্রগাথা
দুলছি আমি অন্যতর এক গোপন গুরুগৃহে
মজ্জা-হাড়ে যুথবদ্ধ অকালে স্বরমাত্রা
দো’তলা ঘর আকাশে আজ দরোজা খুব আটা
যেখানে কেউ থাকে না আর
নয়নতারা কিংবা ধরো নক্ষত্রের জোড়া;
ব্যাকুলতরো বেদনা তার উঠেছে ফের উচ্ছ্বসিয়া
সকাল বেলা শুভ ব্রীড়া
প্রতিটিদিন অভিমানের ক্লান্ত এক রিহার্সেলে
টুথব্রাশ আর চিরুনি ফিতে মেলে,
অচেনা এক পথের বাঁকে আমিও খুব আয়েন্দা যে!
বিরহের এই পড়শীবনে, সকল ফেলে
কোন বা পথে, পথের ধারে খুঁজবো তাকে
প্রেমান্ধ এক পাগল কবি
রাখালও সে, আমারই তো!
এত চেনা
তোমার পায়ের শব্দ এত চেনা, তবু কেন বুঝতে পারি না
কখন যে তুমি আসো নিঃশব্দ বিষাদে ভর করে
আর ফিরে চলে যাও নিভৃতির পরবাসলোকে
দরোজায় কড়া নাড়া আওয়াজ এতো মুখরিত
এত বাষ্প বিচলিত ছিলো যার দু’চোখের তারা
সিন্ধু সারসের মতো কোথায় হারালে,
বলো তো সে কোন্ অনতিদূরের ঘন গিরিপথ….
আঁধারে অনন্যোপায় আমি, দেখি না দু’চোখে কিছু
এইভাবে কেউ প্রাণ কেড়ে নেয় প্রাণের সংরাগে?
বয়স্ক বালক
বাবা-মা’র অধিক আদরে নষ্ট হ’য়ে যাওয়া শিশু;
রূঢ় বাস্তবের শিক্ষা পায়নি সে আনাড়ি বালক!
বড় এলোমেলো তার অনভিজ্ঞ জীবনযাপন—
এতটা বয়স হলো তবু যেন হাঁটতে শেখেনি।
বস্তুত বালক এক-বাস্তবের রৌদ্রদগ্ধ মাটি
কখনো পায়নি স্পর্শ তার দু’টি পায়ের নরম।
আঘাতে ও অপমানে ভেঙে পরা এই যে মানুষ
আমি তাকে প্রেমময় দু’টি হাত বাড়িয়ে দিয়েছি,
নিশ্চিন্তে নির্ভর করে সে-ও দ্রুত আঁকড়ে ধরেছে
আমার দু’হাত! তার চোখে জ্বালি জীবনে আগ্রহ।
আমার যেটুকু সাধ্য-উসকে দেই শিল্পের আগুন,
আমার আদরে বাড়ে—প্রাণপণে বয়স্ক বালক!
প্রেমিক ও পুত্র যেন দু’টি কক্ষ একটি বাড়ির:
মাতা ও দয়িতা দ্রুত দুই কক্ষে যাতায়াত করি!
বস্তুর জগত থেকে কালিঝুলি মেখে ফিরে এলে
আমি তাকে সান্ত্বনার ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে-মুছে নেই…
আমাকে জড়িয়ে বাড়ে, প্রতিদিন, বয়স্ক বালক।
চৌদ্দশত ষাটদিন
তোমাকে দেখেছি সেই চৌদ্দশত ষাটদিন আগে
এমন তো নয়, পুঁজিপতিদের কবিতা শোনাতে
গেছ খুব দূরদেশে, বিনিময় কিছুটা বাড়াতে
পথ চেয়ে তবু বসে থাকি আমি অশ্রু অনুরাগে।
চিঠিপত্র কিছু নেই, নেই কোনো ইমেল অ্যাড্রেস
সকালের দুধ-চায়ে চুমুক না দিয়ে কেউ যায়?
এভাবে, না বলে কিছু—বৃন্দাবন ছেড়ে খালি পায়
এখনো রেখেছো ধরে তুমি সেই পুরানো অভ্যেস।
কবি বন্ধু রবিউল, সমিল প্রাণের দুই দোস্ত
খুঁজতে খুঁজতে সেও চলে গেছে কাব্যের ওপার
তোমার জন্যেই তার ভালোবাসা এমন—অপার
তুমিও বন্ধুর সঙ্গে প্রাণে প্রাণ—যাত্রায় অগস্ত্য।
কে কাকে খুঁজবে বলো, এমন করোনা কালচারে
মৃত্যুর মিছিল যদি রবাহূত, ডাকে বারে বারে।
আলু ও বাচ্চালু
রক্তে রক্তে এই বেলা যে কেটে গেলো হাত,
বক্তে আমার ছিলো কি আজ এমনি সংঘাত?
তুমি নও তো, অন্য কেউ, বলছি তারই গাথা
ধুলোমাটির বাথানে যার থাকার ছিলো কথা;
গ্রোসারিতে ছিল যে সে উপুড় করে মুখ
কাস্টমারের হাতের ছোঁয়ায় কাশে খুক খুক,
এখন কি আর আছে তেমন পাগল করা যুগ
হাত বাড়ালে পাওয়া যাবে ডাল মুসুরি-মুগ
কষ্টে-শিষ্টে দুই কিলো চাল, ভাতের ওপর আলু
মধুমেহের রোগীরা সব নয়তো তেমন চালু;
ঘরের মধ্যে থেকে থেকে গজিয়েছে গাছ,
আলু হলো গর্ভবতী কী যে সর্বনাশ
ছেলে বললো, শোন গো মা শোন,হচ্ছে নষ্ট সবি,
ভাজো, নয়তো সেদ্ধ করো, তোমার যেমন হবি,
ত্রিশ দিনে তিন পোয়া চাল, আলু খাবো কখন
ডাক্তারের তো নিষেধ আছে শর্করা নয় এখন
শাক-সবজি যতই খাই, প্রোটিনে সাবধান
বেহিসাবী একটু খেলেই অক্কা পাবে জান
শরীর ফেটে আলুর কুড়ি তরতরিয়ে বাড়ে,
গরম জলে কি করে আজ তাকেই দেই ছেড়ে;
জানি না তো কী বেদনায় সময় ছিল ছাওয়া
শস্য-প্রাণে জড়াজড়ি অলৌকিক এক মায়া।
বর্ষার সনেট
তুমি কি বর্ষার কান্না মেখে শুয়ে আছ অন্ধকারে?
হয়তো হবে না দেখা, আর কোনোদিন—এই ভেবে
আলস্যের বেলা কাটে দীর্ঘ ঘুমে, নিদয়া স্বভাবে
আলোতেও আজ একা আমি এই সঘন আষাঢ়ে।
বিরহী যক্ষের মতো কাঁদো যদি বৃষ্টির প্রণামে
বর্ণ পতনের মতো ঘুম নামে শ্রাবণের ঘাসে
বৃষ্টি আসে, বৃষ্টি যায় নিরুত্তর কবরের পাশে
পূর্বমেঘ ছুঁয়ে তবু ডাকো যদি ঐ বৃষ্টির নামে;
নীপবন ভেসে যায় রিমঝিমে, নব ধারাজলে,
বিরহ শয়ানে রাধা খোঁজে মিলনের রতিকণা
প্রণয়ের পিছুটান আজো তবু কিছুতে ছাড়ে না,
নিসর্গের স্মৃতিজলে মায়াটুকু থেকে যায় ভুলে।
বৃষ্টির জানালা খুলে শুনি তার মগ্নবীণা, সুর
তুমুল বৃষ্টিতে বাজে দূরে বুর্কিনা ফাসোর ক্ষুর।
(বুর্কিয়া ফাসো=দ্রুততম ঘোড়া হিসেবে সমধিক পরিচিত)
অভিমান
কী বা এসে যায় কারু, তাঁর অভিমানে?
বহুতল অভিমান নিয়ে তবু চলে গেলে তুমি
রহস্যের চাবিহাতে যেন এক অর্ধনারীশ্বর।
আমি পড়ে রইলাম একা,
দীপ্তিহীন মুহূর্তের মতো দৃশ্যমান স্তব্ধতায়:
সবাই কেমন জেনে গেলো আমি একা
পিটিয়ে ঢেঁড়ার ঢোল বলে দিয়ে গেলো
আমি একা চিরন্তনী।
দেবালয়ের মতন নিথর তোমার দেহখানি
প্রেমিকের দৃঢ় অঙ্গীকার ভঙ্গ করে—
খননের মাটি স্পর্শ করেছিল যেই
আকাশ বাতাস পাতালের অগ্নিজল
মুহূর্তেই সমস্বরে উঠেছিল কেঁদে
তুমি একা;
দ্রুত খুলে ফেলো নাকের বেসর, রঙিন বসন
শরীরে জড়িয়ে নাও মেঘ-রঙা পাড়ে শাদা শাড়ি
তুমি ঘরহীন, আঙিনাবিহীন রৌদ্র;
তুমি একা,
স্বজনহারানো বন্ধুহীন অহর্নিশি
তরুছায়াহীন এই সৌরমণ্ডলের অধিবাসী
তুমি একা;
গন্তব্যবিহীন এক অনিঃশেষ পথের ঠিকানা—
শামুখের মতো মুখ গুঁজে আছি নিজে নিজে
সকলের অগোচরে—
কবিতার মতো আজ নিঃসঙ্গের সঙ্গী হতে গিয়ে
সত্যি সত্যি বুঝে গেছি
আমার নিজের আর কোনো ঘর নেই,
যে কারুর নীড় আজ আমার নমস্য তপোবন
চোখের পাতায় ঘুম নামাবার এক
ক্লান্তিকর প্রতিশ্রুতি—
অদৃষ্টের সুশোভিত পালক ঝরতে থাকে বেশ
দুঃখ জাগানিয়া বুকে কাঁদে তার অচেনা কুসুম
দেশ, দেশপ্রেম—সবি অস্তমিত খেলা
চলে যেতে পারি আজ পৃথিবীর যেকোনো সীমানা;
ভিসার বিপাক ছুঁয়ে শূন্যতার পথে যেতে যেতে
কী বা থাকে বাকি?
মায়ার কাজলে মাখা সন্তানের মুখ?
দিগন্তবিহীন আকাশের মেঘে সন্তানেরা আজ
যেকোনো শাবক,
গায়ক পাখির মতো দিগবলয়ের দিকে আছে
অধীর তাকিয়ে—
রসনার রাজনীতি হেরে গেছে কবে
যা কিছু অভ্যেস প্রিয়তর সবি গেছে তাঁর সাথে
জলযোগে তিনবেলা আহারের খুদ
যে কারুর দরোজায় অপেক্ষায় থাকে
উন্মুখ শব্দের মতো;
ফেরারি মেঘের যত একাকিত্ব, খুঁজে ফিরি আজ
ভিক্ষালব্ধ জ্ঞানে;
জনম ভিখিরি আমি সেই
অনাদরে, তিরস্কারে বেঁচে থাকি তবু
নিঃসঙ্গ শিল্পের মাঝি এক!
আমি
বহু ঝড় জলোচ্ছ্বাস আর অগ্নি মাড়িয়ে
আজ আমি এখানে এসে দাঁড়িয়েছি একা;
সম্পূর্ণ একলা
নৈঃসঙ্গ ছাড়া কোনো বন্ধু ছিল না আমার
করতলে হাত রেখে
গোপন কোনো বেদনা জানাতে পারি অকপটে
এ রকম কোনো বন্ধু কখনো ছিল না
অতিক্রান্ত এই দীর্ঘ যাত্রায়;
কিছু শব্দ, বাক্যাংশ আর ছন্দের মিলমিশে
এক মেঘাবৃত্ত আকাশ ছায়া দিয়েছে মাথায়
ঝড় বিদ্যুৎ, তুষারপাত অগ্ন্যুৎপাত
আমার নিত্য সঙ্গী
আমি এক অখ্যাত কন্যা-সন্তান
আমার শারীরিক মূল্য
দস্তা ও তামার দরের চেয়ে বেশি নয়।
আমি ভুলে যাইনি…
আইয়ামে জাহিলিয়া যুগে জন্মমাত্রই
আমাকে হত্যা করা হতো গলাটিপে
আমার জন্যে গর্বিত হয় না কখনো
আমার পিতৃকূলের কেউ;
আমার ভাই সোনার দরে বিকোয় আজও
এই পড়ন্ত যৌবনেও
অলঙ্কার গড়াবার মতো খাঁটি সোনা সে
বংশ রক্ষার প্রধান কবচ—
আমি কেউ নই, কোথাও থাকি না আমি
কোনো স্থিতি নেই আমার
তবু বহু ঝড়, জলোচ্ছ্বাস আর প্রলয় মাড়িয়ে
আজ আমি এখানে এসে দাঁড়িয়েছি একা;
আমি জানি, আমি আরও জানি
আমি জানি আমাকে ছাড়া
এই পৃথিবী এগোবে না এক পা….
আমি সেই সৃষ্টিশীল নারী;
বহু ঝড়, জলোচ্ছ্বাস আর অগ্নি মাড়িয়ে
আজ আমি এখানে দাঁড়িয়েছি একা—
সম্পূর্ণ এ-ক-লা।
আমার মা
কুঞ্জলতার মতন আমার মা
ঘন সবুজে ঘেরা পাহাড় অতুল,
চিত্তের বৈভবে, বিত্তে তিনি যেন স্বপ্নের নিউইয়র্ক শহর;
ঢল ঢল বেতস-লাবণ্য বাতাসে অনঙ্গ শৈশব
স্নেহ-মমতায় চিরচেনা বাংলার পলিমাটির নরম কাদা
শাসনে-বারণে চৈত্রের চৌচির মাটির মতো কঠিন পাথর,
মা আমার সব কটি বাংলা বর্ণমালা, প্রবাদ, প্রবচন
সন্তানের ভবিষ্যৎ ভাবনায় প্রার্থনারত গণিতজ্ঞ তিনি
সর্বংসহা জননী অমিয়, অপরিমেয়;
স্বপ্নে সর্বদা আদর্শলিপির ছায়া,আকাশ-মাটি-পাতালঘিরে
জীবন সঞ্চারি প্রতিটি মুহূর্তের গাথা।
নিবিড় কাতরতা বুকে নিয়ে হাসি-কান্নার জন্মদাত্রী তিনি
জনকের ও জন্মদায়িনী;
সন্তানের সম্মুখে
অন্ধকার পথে
হঠাৎ আলোর হিরণ্ময় জ্যোতি
গৌরবে সৌরভে রাত্রি-দিন সন্তানের একনিষ্ঠ প্রহরী যেমন;
পদ্মা-মেঘনা-শীতলক্ষ্যার জলরাশির মতো তাঁর স্নেহধারা
কঠিন মাটিতে যেন বিমুগ্ধ বৃষ্টির ফলা
অবিরত বয়ে যায় সন্তানের মঙ্গল বরাভয়,
কল্যাণের কুয়াতলে তাহাজ্জোতের জায়নামাজে তিনি
সর্বদা তুমুল বর্ষার মতো
আকাশ কাঁপিয়ে নামেন ধরায়
বংশী নদীর দুই তীরে শরতের কাঁশবনে একেলা বিধুর
মাতৃ জরায়ণের অঙ্গ জুড়ে আজও কী
তাই বিপুল শূন্যতা,
হাহাকারময় প্রসব বেদনার রাত্রি-দিন;
নীরবে বাস করে
অলৌকিক নিভৃতি চেয়ে।
পাখির সঙ্গে ব্রেকফাস্ট
ধানমন্ডি বসে সকালের নাস্তা-রুটি
আর ভাজি, সঙ্গে থাকে ডিম সেদ্ধ, পাশে
মা ছাড়াও কেউ কেউ; নিদেন আয়েশা,
করোনা দূরত্বে বসবাস, পাখি ছাড়া
কেউ কাছে আসবার কথা নয় আর।
উন্নত দেশের ব্রেকফাস্ট পথে ওড়ে
সেভাবে জমিয়ে নাস্তা খায় না এদেশে।
অফিস যাবার পথে স্টারবাক্স কিংবা
টি মহর্টনের এক মগ কফি হাতে
সাইডওয়াক ধরে হাঁটতে হাঁটতে;
করোনা ফেইস তিন থেকে পুনঃ দুই
রেস্তোঁরা হয়নি বন্ধ যদিও তবু তো
আয়েশী ভঙিতে বসে খাওয়া বারণ
প্যাটিওয়েতে গোটা তিনেক টেবিলে
ভিক্ষুকের মতো ঝুলে আছে অনাদরে
পাঁচটি চেয়ার যেন করোনায় ক্লান্ত
হোমলেসদের দুর্ভাগ্যের কথা ভেবে,
অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেন রেখেছে পেতেই
সচেতন সোনাভানু বসে না এখানে।
আমি যাই মাঝে মধ্যে ক্রোঁসো আর কফি
খেতে, মিডিয়াম কফি ডাবল ডাবল,
বলতেই ইন্ডিয়ান মেয়েটি, অদিতি
বুঝে নেয় কি চাইছি আমি, মিষ্টি হেসে
বলে, আই রিমেম্বার ইউআর আ ডায়েবেটিকস;
আপ্লুত ভঙিতে বলি থাঙ্ককিউ লাভ।
বাইরে বেরিয়ে দেখি টেবিল তিনটি শূন্য
চড়ুই পাখিরা ছাড়া কেউ নেই আজ
সিংহাসন টেবিলেই বসে আছে দিব্যি,
পাশের টেবিলে আমি বসেছি নিঃশব্দে
অতিথি চড়ুই এলো চঞ্চু-সম্ভাষণে
বুকের এতটা কাছে কখনো আসেনি,
ভীষণ বিব্রত, হ্যাসব্রাউনের কণা
অবশেষ, কিছু নেই আমার হাতেও,
প্যাকেটের ঘুলঘুলি খুঁজে পেতে তবু
সামান্য দিলাম কিছু লাবণ্যের ছোঁয়া
পাখিবন্ধুদের নিয়ে সকালটা আজ
অতিথি দ্বীপের মতো জেগে উঠেছিল।
হেমন্তের রঙঝরা নাস্তার টেবিলে।