কোনো এক শ্রাবণ সন্ধ্যায় তোমাকে দেখছিলাম
বেহায়া বাতাস উড়াচ্ছে তোমার চুল ও শাড়ির আঁচল
স্বর্গ-অপ্সরীর মতো কটিদেশ, নদী ও নিতম্বসহ তুমি চলে যাচ্ছ—
আমি বিলীন হয়ে যাচ্ছি সন্ধ্যার শেষ সূর্যের মতো
মথিত সঙ্গমশেষে দিগন্ত যেখানে নুয়ে পড়ে—
গোলাপি ঠোঁট, তোমার মায়াবি চোখের মিটিমিটি তারায়।
একবার তুমিও চেয়ে দেখো এই নীল চোখের দিকে
ফেরাতে পারবে না চোখ—আটকে যাবে গভীর আইরিসে।
চলো দুজনেই ভিজে যাই কোনো নীরব নৈঃশব্দ্যে…
এবং আমাকে কাছে ডাকো
. জড়িয়ে ধরো
. যেন বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজে যায় এই দেহমন।
আমাকে আর ফিরায়ে দিও না তোমার ওই নিপুণ সলজ্জ চোখের ভাষায়।
ছলাকলাহীন এই রাত্তিরে আমাকে ভাসাও তুমি, তোমার গ্রন্থিত সাগর-সমুদ্রে
তোমাকে ছাড়া এখন আমি একটা অস্থির অবহেলিত সময়ে পড়ে আছি।
দক্ষিণা বাতাসও লাগে না আমার শরীরে—
. আমি একা
. নিদারুণ একেলা পড়ে থাকি
. সারাটা দুপুর বিকেল আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
তুমি এসো, এসো প্রিয়তমা! ঢেলে দাও অবিমিশ্র রোদ ও কামনার জল
. দারুণ দহলিজে আমার…
প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসায় পৃথিবীতে নেচে ওঠে ব্যকুল বিমুগ্ধ ভ্রমর।
তুমি ছাড়া আশ্বিনের অমাবস্যায় ডুবে যাচ্ছে আমার সামনের মাঠ-ঘাট
. বৃষ্টিভেজা তুখোড় তেপান্তর।
অযাচিত, অন্ধকার শক্ত-শূন্য শিহরণে কেঁপে যাচ্ছে আমার সমস্ত বেলাভূমি।
তুমি এসো আমার এই নির্জলা নীল ভূমিতে
আপেল, আতর অথবা লেবুফুলের চাষে মগ্ন হবো দুজনে
বিপ্রতীপ মধুর হবে আমাদের এই চাষবাস, চাষের তৈজসপত্র
. বৃষ্টি ও বৃষ্টির বেসাতি—
যখন দেখি তোমাকে ছাড়া জোছনার তীব্র আলো আছড়ে পড়ে
. আমার ভিটেবাড়ি, বারান্দার চারপাশে;
আমি মর্মাহত হয়ে ফিরে আসি, আমি বারবার ফিরে আসি
. নৈঃশব্দ্যময় নিভু নিভু আমার জলের বিছানায়…
এসো প্রিয়তমা! আমরা পৃথিবীতে নামিয়ে আনি আরেকটা ঐশ্বর্যময় সাগর
. মানুষের দেহঘরে আষাঢ়স্য রোদের রোশনাই।
তিরতির করে সামনে হাঁটি সমুজ্জ্বল তারার মতো;
পথ চলতে কখনো ব্যর্থ হয় না পাথর-প্রেমিক।
এবং আমি দ্রুত বুঝতে পারি
. প্রেমের সরলতা
. সফলতা
. ব্যর্থতা—
ফিরে যাওয়া কোনো বিবসন মানবীকে আমার ভালো লাগে না—
তুমি কি ফিরে যেতে চাও কোনো এক অবারিত অন্ধকার গহ্বরে?
. খুলে দিলাম দিগন্তসম খাঁচার দুয়ার…
বীক্ষ্যমাণ বশরাই গোলাপের আশীর্বাদে আমি পৌঁছে যাব আমার গন্তব্যে
অমীমাংসিত কোনো সৌন্দর্যের ভেতর আমি পৌঁছে যাব
. আমার ব্যথার বিড়ম্বনাসহ…
আমি গলে গলে যাব কোনো এক শান্ত-শুভ্র শ্রাবণ সন্ধ্যায়
আমাকে আর পাবে না
. আমি গলে গলে যাব
. গলে গলে…