কোরাস
অভ্যর্থনা দিতে দিতে আমাদের হাত
শক্ত হয়ে গেছে—
নরম হয়ে গেছে মন,
মাথা খুঁজে পাচ্ছে না ঘড়ি।
আড়ি ভেঙে বাদুড় ঝুলছে পড়শি গাছে
দুপুর থেকে রাত…
সব পাটিতেই হাত দাঁড়ানো
প্রতিটি হাতের মুখে নরম উত্তাপ
প্রতিটি হাতের উহ্যে রহস্যের মক্তব
রিকশা ফেরত বিকেল
মৌচাকের হুল
মদের মস্তিষ্ক
বেহুলার পণ…
গলি থেকে অলি
পাঁচ থেকে পঞ্চাশ
সব পাপেই ইতিহাস থাকুক
আরো খুচরো হোক সবাই
বাঁচুক ছায়ানৃত্য ও তার ঘৃণিত বাহু।
যারা স্ত্রী শোকে মোম উৎসর্গ করেছিল
বনের মা ভেবে বকুল তলায়
সিজদা দিয়েছিলো বেশুমার
তাদের ডাকি
তারা বলুক—
আবহাওয়া অফিস ঘুমায় কেনো,
আন্তঃট্রেন থেকে আমাদের বৈশাখ
কতো দূর…
সকল হাতেই কাচভাঙা ক্ষত;
তারা ভেবেছিল পাপ মানে ঈশ্বর
মৃত্যু মানে মুক্তি
ইতিহাস মানে লজ্জা।
আমরা সেই লতা-পাতার ফুটেজ নিয়ে
লজ্জার খোলস ছড়াতে শুরু করি;
বেরিয়ে আসুক বানিয়াশান্তার তাল
মাতৃশোকের অব্যয়
এবং তদ্রুপ সাইনবোর্ডের চেহারা।
যে প্লেকার্ডে শ্লীল শব্দের নামে
. পুঁজিবাদ
আন্দোলনের নামে শ্রাদ্ধের ঘোড়া
আর ধর্মের নামে যুদ্ধগাছের শরীর…
সব কারচুপি আমরা আবার চাই
আর চাই ভদ্র পল্লীর ঈশ্বর
দূরেই থাকুক বেশ্যার পেটিকোট
অভদ্র পল্লী থেকে বাজে পর্যন্ত নামুক!
. কেবল রাজনীতি
. কেবল শাদা পাঞ্জাবি
. কেবল অশ্লীল ভাষণে ভ্যাট না বসুক—
থই থই মুখের নিশানা ঠিক!
তারা চায় নৃত্যের মহড়ায় চাঁদ আসুক
. আয়ের সিথানে সবুজ থাকুক
. বিশ্বাসের ব্যাংকে রোজা ডাকুক
কিচ্ছু না—
আর কিচ্ছু চায় না
এই মাটির মুখ…
আমাদের খৈলানে আর কোনো অভ্যর্থনা উঠবে না
শক্ত হাতে জোয়াল-লাঙল—
স্লোগানের ডাক উঠবে
. ভয়ে ভয়ে
. সয়ে সয়ে
. অদ্ভুত;
. অতি অদ্ভুত বিষবাঁশি
. আবিষ্কৃত হবে—
সেই বাঁশিতে রাখাল ডাকবে
প্রতিটি অভ্যর্থনা থেকে পালাতে থাকবে
. কুঁজো পিঠ
. নিঃসঙ্গ জুতো
. অশ্লীল পা
. মৃত্যুজয়ী চোখ—
তারা জানবে এই নাক
. এই ধুলো-বালি
কোনো অশ্লীল জীবনের জন্ম দেয়নি।
তারা জানবে এই ধর্ম
কোনো বিদ্রূপের জন্ম দেয়নি,
এই দেশ কোনো হত্যার কাফন
. ঠোঁটে নেয়নি।
অতঃপর আমাদের চুলের ঘামে,
ধানের ঘ্রাণে আলোকিত হবে জীবনের পৃষ্ঠা
. দীর্ঘছায়া থেকে জন্ম নেবে
. ধৈর্যের দুয়ার আবার একদিন
. জমা হতে থাকবে আর্তি
. জমা হতে থাকবে শ্রম
. জমা হতে থাকবে ঘূর্ণি
অন্ধকারে
কোনো অভ্যর্থনা আর
হাত খুলে তাড়াবে না আমাদের—
আমরা মাঠে—
আমনে
আউশে
কলাইয়ের সুন্দরে
ঢেউ তুলে
চিকিৎসা করবো
কান ও কানাকানির।