আজ ১৭ জুন, আজ কবি আহমেদ শিপলুর জন্মদিন। ১৯৭৬ সালের আজকের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। এই পর্যন্ত তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো হলো: বসন্তের অপেক্ষায় (১৯৯৯), কোথাও তুমি নেই (২০০১), ক্রাচে ভর দেয়া যৌবন (২০০৫), মন পাখিটার ডানা কাটা উড়তে মানা (২০০৯), নির্বাচিত কবিতা (২০১৩), বালিকার আকাশ (২০১৫), প্রজাপতিরা ফিরে গিয়েছিলো (২০১৭), বিষণ্ন ইস্পাত (২০১৮), বিষবৃক্ষের উল্লাস (২০১৮)।
সম্পাদনা: কাব্যকল্প (আবৃত্তির ক্লাসের জন্য সম্পাদিত গ্রন্থ২০১৮), আবৃত্তির শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১৮); নন্দিতা (শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির পত্রিকা)।
কবিতা সম্পর্কে আহমেদ শিপলুর ভাষ্য, ‘ধূধূ বিরান প্রান্তরে আকাশ-মাটির মিলনরেখায় পৌঁছানোর বাসনায়, বিরতিহীন যাত্রা। তবু অধরাই থেকে যায় গন্তব্য। কবিতা অনেকটা ওই রকম। দেখা যায়, বোঝা যায়। চেনা, জানা, শোনা কথা। দুর্বোধ্যও নয়। উপলব্ধিতেও ধরা দেয়, কিন্তু কখনোই সম্পূর্ণ পাঠোদ্ধার হয়ে ওঠে না। আবার কিছু কবিতা স্পষ্ট, দর্শন নির্ভর। কবিতা মানুষকে পথ দেখাতে চায়, সমাজের শুশ্রূষা করতে-পথনির্দেশ দিতে চায়। তাই সেসব কবিতায় শব্দালঙ্কার, চিত্রকল্প স্পষ্ট ছবি আঁকে। কল্পনার নয়, সে চিত্র বাস্তবের। তবে তারমধ্যেও একপ্রকার ধোঁয়াশা থাকে। যা কিনা কবি’র সে বিষয়ে সরাসরি বলতে না পারার অসহায়ত্ব অথবা শিল্পমান অক্ষুণ্ন রাখার প্রয়াস।
জীবনের গূঢ় উপলব্ধি, নীরব অনুধাবন, পরিপার্শ্বের বিশ্লেষণ, কবিতার উপজীব্য হয়ে ওঠে কখনো কখনো। ব্যক্তিক যাতনা, প্রেম, বিষাদ, হর্ষ, নৈরাশ্য হতে পারে কবিতার প্রকাশ। তবে কবিকে আরও সচেতন হতে হয়। চোখ রাখতে হয় দশ দিগন্তে। সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, রাজনীতি, যুদ্ধ, ক্ষুধা, দারিদ্র্য; সর্বোপরি মানুষ, উদ্ভিদ, প্রাণিজগৎ, ঈশ্বর ও শয়তান। সকলের প্রতিই তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হয় কবিকে।
কবিকে দায়বদ্ধ হতে হয় প্রকৃতির কাছে, জীবনের কাছে। কাম-বাসনার ঊর্ধ্বে উঠে প্রেমকে জয় করতে হয় হৃদয় দিয়ে। সাধক ও সৎ হতে হয় আত্মার কাছে। দর্শন চিন্তায় নিজের কাছেই প্রতিষ্ঠিত করতে হয় নিজেকে। চারিত্রিক বিশৃঙ্খলতা কোনোমতেই কবিত্ব নয়। কবিকে শক্তি অর্জন করতে হয় বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। কবি বলতে বুঝি প্রেমিক, দার্শনিক, দিকনির্দেশক।
আজকাল ছন্দ হারিয়েছে কবিতা। কোনো কোনো কবি গর্ব করেই ছন্দ না জানা কিংবা না মানার কথা বলেন। কিন্তু শব্দকে কবিতা হয়ে উঠতে হলে নান্দনিক হতে হয়, শ্রতিমধুর হতে হয়। তাল লয়ের সমন্বয়ে শব্দের ব্যঞ্জনায়, পাঠকের কাছে হয়ে উঠবে আনন্দপাঠ। প্রচলিত ছন্দ না মেনেও যদি কেউ তা সৃষ্টি করতে পারেন তবে সেই কবিতা নিশ্চয় প্রশংসিত হবে।
আহমেদ শিপলুর স্বকণ্ঠে তার কবিতা শুনতে ক্লিক করুন
;