॥ মুক্তি জহির॥
নিউ ইয়র্ক কুইন্স লাইব্রেরির বাংলা বুক ক্লাব ‘পাঠকের পাতা’র এ মাসের বই আলোচনায় থাকছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী। বইটির ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন লেখক ও ভাষা আন্দোলন গবেষক ওবায়েদুল্লাহ মামুন। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করবেন ড. নুরন নবী, ড. মাহবুব হাসান, সাংবাদিক কৌশিক আহমেদ, কবি কাজী জহিরুল ইসলাম, লেখক আব্দুল্লাহ জাহিদ প্রমূখ।
আলোচনার পর বাচিকশিল্পীদের পরিবেশনায় থাকছে স্বাধীনতার কবিতা পাঠ। আবৃত্তি করবেন ক্লারা রোজারিও, নজরুল কবীর, বিলকিস রহমান দোলা, তাহরীনা পারভীন প্রীতি, সাবিনা নীরু, শুক্লা রায় ও গোপন সাহা।
২০০৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তার কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলো ছিল পুরনো, জীর্ণ ও অস্পষ্ট। ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ অবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনের কথকতা এই খাতাগুলোতে লিখেছিলেন। সেই লেখাগুলোকে একত্রিত করে দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড ২০১২ সালে ৩২৮ পৃষ্ঠার এই আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থটি প্রকাশ করে।
বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে।
গ্রন্থটিতে আরও রয়েছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসার কথাও, যিনি তার রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে তার পাশে ছিলেন, সেসব বর্ণনা। একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনা বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে।
পাঠকের পাতা গঠিত হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্স লাইব্রেরীর পৃষ্ঠপোষকতায়। এই বাংলা বুক ক্লাবটি প্রতি মাসে একটি বই নির্বাচন করে সদস্যদের পড়তে দেয়। মাসে একদিন সবাই একত্রিত হয়ে বইটির ওপর চুলচেরা বিশ্লেষণ করে। কর্মসূচিটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বই ব্যবচ্ছেদ’। ফেব্রুয়ারির বই ব্যবচ্ছেদে স্থান পেয়েছিল ওবায়েদুল্লাহ মামুন সম্পাদিত ‘একুশের কথা একুশের চেতনা’ গ্রন্থটি।