আজ ৩০ মার্চ, আজ কবি গোলাম কিবরিয়া পিনুর জন্মদিন। ১৯৫৬ সালের আজকের এই দিনে তিনি গাইবান্ধায় জন্মগ্রহণ করেন।
গোলাম কিবরিয়া পিনু, মূলত কবি হলেও লিখেছেন প্রবন্ধ, ছড়া ও কলাম। গবেষণামূলক কাজেও যুক্ত। ইতোমধ্যে তার ২৩টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর-সহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে বাংলা একাডেমির জীবনসদস্য ও এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর সদস্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। জাতীয় কবিতা পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সভাপতি। দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন সংগঠন থেকে পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। পেশাগত প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রয়োজনে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, বলিভিয়া, ন্যাদারল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছেন ।
গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটি আর্ন্তজাতিক মিডিয়া বিষয়ক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করেছেন। এর আগে এফপিএবিতে উপপরিচালক (অ্যাডভোকোসি), ফোকাল পয়েন্ট ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া এফপিএবি থেকে প্রকাশিত মাসিক ‘সুখী পরিবার’-এর সম্পাদক হিসেবে ১৯৮৩ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বিসিসিপি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও যুক্ত ছিলেন। পেশাগতভাবে বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকতা, কলামলেখা, সম্পাদনা ও অ্যাডভোকেসি বিষয়ক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকেছেন।
উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো—এখন সাইরেন বাজানোর সময় (কবিতা), ১৯৮৪; খাজনা দিলাম রক্তপাতে (ছড়া), ১৯৮৬; সোনামুখ স্বাধীনতা (কবিতা), ১৯৮৯; পোট্রেট কবিতা (কবিতা), ১৯৯০; ঝুমঝুমি (ছড়া), ১৯৯৪; সূর্য পুড়ে গেল (কবিতা), ১৯৯৫; জামাতের মসজিদ টার্গেট ও বাউরী বাতাস (প্রবন্ধ), ১৯৯৫; কে কাকে পৌঁছে দেবে দিনাজপুরে (কবিতা), ১৯৯৭; এক কান থেকে পাঁচকান (ছড়া), ১৯৯৮; দৌলতননেছা খাতুন (প্রবন্ধ), ১৯৯৯; আমরা জোংরাখোটা (কবিতা), ২০০১; সুধাসমুদ্র (কবিতা), ২০০৮; আমি আমার পতাকাবাহী (কবিতা), ২০০৯; মুক্তিযুদ্ধের ছড়া ও কবিতা (ছড়া ও কবিতা), ২০১০; বাংলা কথাসাহিত্য: নির্বাচিত মুসলিম নারী লেখক ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (গবেষণা), ২০১০; ও বৃষ্টিপাত ও ধারাপাত (কবিতা), ২০১১; ফসিলফুয়েল হয়ে জ্বলি (কবিতা), ২০১১; মুক্তিযুদ্ধের কবিতা (কবিতা), ২০১২; ফুসলানো অন্ধকার (কবিতা), ২০১৪; উদরপূর্তিতে নদীও মরে যাচ্ছে (কবিতা), ২০১৪; নিরঙ্কুশ ভালোবাসা বলে কিছু নেই (কবিতা), ২০১৫; ছুঁ মন্তর ছুঁ (ছড়া), ২০১৬; কবন্ধ পুতুল নাচে(কবিতা), ২০১৬।
গোলাম কিবরিয়া পিনুর কবিতা সম্পর্কে কবি-প্রাবন্ধিক-সমালোচক মামুন রশীদ লিখেছেন, ’তার কবিতার প্রকাশভঙ্গি, তার কবিতার বিষয় নির্বাচনই তার কবিতার প্রধান প্রাণশক্তি। অভিজ্ঞতা ও কল্পনার মিশ্রণে যে জগৎ তিনি সৃষ্টি করেন, তা শুধু একটি সময়কেই ধরে রাখে না, হতাশার কথাই ব্যক্ত করে না, শুধু গতিহীনতার কথাই বলে না; একইসঙ্গে সময়কে আলাদা করে চিহ্নিতও। তেমনিভাবে আমাদের হৃদয়ের ভেতর থেকে উঠে আসা অনুভূতিমালাও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে তার রচিত পঙ্ক্তিতে। স্বাধীনসত্তার ভেতর দিয়ে তিনি যে পথ নির্মাণ করেছেন, তা একান্তই তার নিজের। ভিড়ের ভেতরে হারিয়ে যাওয়ার নয়।’
সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন, রংপুর তথ্য কেন্দ্র পুরস্কার (প্রবন্ধ, ১৯৭৪); বাংলাদেশ পরিষদ-রাজশাহী বিভাগীয় পুরস্কার (বক্তৃতা, ১৯৭৪); গাইবান্ধা কলেজ ছাত্র সংসদ পুরস্কার ( প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা, ১৯৭৪); আমরা ক’জনা বিদ্রোহী সূর্যকণা পুরস্কার (১৯৭৫); গাইবান্ধা তথ্যকেন্দ্র পুরস্কার (প্রবন্ধ, ১৯৭৬ ও ১৯৭৭); জাতীয় শিল্প, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক উৎসব-গাইবান্ধা পুরস্কার (কবিতা ও অন্যান্য ১৯৭৭); মাদার বখশ ছাত্রাবাস-রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কার (প্রবন্ধ,১৯৮১); বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সম্মাননা-কবিতা,১৯৮৫; বাংলা কবিতা উৎসব সম্মাননা কোলকাতা, হলদিয়া, ভারত,১৯৮৮; ‘বাংলার মুখ’ সাহিত্য-সাংস্কৃতিক উৎসব সম্মাননা, বালুরঘাট, পশ্চিমবঙ্গ,১৯৯৭; সৌহার্দ্য’৭০ সম্মাননা, কোলকাতা,২০০৩; অনিরুদ্ধ’৮০ সম্মাননা, কোলকাতা,২০০৩; বিন্দুবিসর্গ সম্মাননা, ২০০৩; দীপালোক বিজয় দিবস সম্মাননা পদক, কবিতা-২০০৬; লোকসখা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, কোলকাতা কর্তৃক লোকসখা সম্মাননা, ২০০৮; উইমেন ডেলিভার আমেরিকা-এর ফেলোশিপ অর্জন -২০১০; এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১০; বগুড়া লেখক চক্র সম্মাননা ২০১৬; কবি বিষ্ণু দে পুরস্কার (ভারত) ২০১৬।