চিন্তাসূত্র ডেস্ক
অমর একুশের গ্রন্থমেলার প্রথম ছয়দিনে ৫ শতাধিক নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে কবিতা শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এরপরই রয়েছে শিশুতোষ গ্রন্থ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে উপন্যাস এবং ছোট গল্প। মেলায় মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির তথ্য কেন্ত্র থেকে বাসস’কে এ তথ্য জানানো হয়।
মঙ্গলবার প্রকাশি হয়েছে ১৩৮টি নতুন বই। এ নিয়ে মেলায় ছয়দিনে ৫৩৬টি নতুন বই প্রকাশ পেল। মেলায় ২ ফেব্রুয়ারি ৫৫টি, ৩ ফেব্রুয়ারি ১২০, ৪ ফেব্রুয়ারি ১১১ ও ৫ ফেব্রুয়ারি ১১৬টি নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে। বই প্রকাশের ব্যাপারে প্রকাশকরা জানান, মেলায় সবসময়ই প্রথম সপ্তাহেই চার ভাগের এক ভাগ বই আসে। এবার ছয়দিনের মাথায় ৫ শতাধিক এসেছে। প্রকাশনার এই গতি সন্তোষজনক।
বাংলা একাডেমির স্টল থেকে জানানো হয়, এ পর্যন্ত বাংলা একাডেমির স্টলে সর্বাধিক ৭৬টি নতুন বই এসেছে। প্যাভিলিয়ন দেয়া বড়মাপের প্রকাশনা সংস্থাগুলোর স্টলেও বিশ-পঁচিতশ ভাগ নতুন বই এসেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে সৃষ্টিশীল প্রকাশনা সংস্থার স্টলগুলোতেই বেশি নতুন বই বেশি এসেছে।
অন্য প্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ছয়দিনে ৫ শতাধিক বই খুবই উল্লেখযোগ্য ব্যাপার। গতবারও পাঁচদিনে এত বই মেলায় আসেনি। তিনি বলেন, বই আসছে প্রতিদিন। হয়তো অনেক বই তালিকায় আসছে না। আমার মনে হয় নতুন বই ৭শ’ ছাড়িয়ে গেছে।
আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে অসংখ্য মূলবান গ্রন্থও প্রকাশ পেয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ওপর আমাদের স্টলে নতুন পাঁচটি বই এসেছে। সব মিলে এ পর্যন্ত আমরা ৩৩টি নতুন বই প্রকাশ করেছি।
অন্বেষা প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন জানান, তারা ১৮টি নতুন বই এনেছেন। হুমায়ুন আহমেদের পুরনো বইগুলো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি মেলার ধূলা নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেন। বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিত রাস্তাগুলোতে বালি উড়ছে সারাক্ষণ। তাদের স্টলের বই প্রতিদিন ধূলায় একসার হয়ে যাচ্ছে।
পার্ল পাবলিশার্স গতকাল মেলায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের শিশুতোষ বই ‘হালুম’ প্রকাশ করেছে। দু’দিন ধরে এই বইটিও ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে স্টল থেকে জানালেন বিক্রেতা আহমেদ হায়দার। তিন জানান, দুইদিন ধরে পাঠকরা ভিড় করছে বইটি কেনার জন্য। বইটিতে সাকিব তার ছোটবেলার বেশকিছু ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছেন।
এদিকে মঙ্গলবার মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘অশ্বিনী কুমার দত্ত: জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বদিউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর রশিদ। আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী, লেখক সৈয়দ বদরুল আহসান, ড. জালাল আহমেদ ও মনিরুজ্জামান।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর রশিদ বলেন, ভাষাপ্রেমী ও ভাষাসৈনিক অশ্বিনী দত্ত কুমার’র সাহিত্যসমগ্র বর্তমান প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরা প্রয়োজন। এই জ্ঞানী ও মেধাবী সন্তান মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করে গেছেন।
কবি আসাদ চৌধরী বলেন, ভাষা আন্দোলনে জেলা পর্যায়ের ইতিহাস এখনো পুরোপুরি গ্রন্থ আকারে আসেনি। এ দৈন্য দূর করা প্রয়োজন। দুই-চারটে জেলার ইতিহাস বিক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ পেয়েছে মাত্র। এ ব্যাপারে গবেষার কাজও বাড়ানো দরকার।