[কবিতার আঙ্গিক-প্রকরণ-বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যে সাধকরা চরম পরাকাষ্ঠা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন, তাঁদেরই একজন আবিদ আনোয়ার। কবিতার পাশাপাশি লিখেছেন কবিতা-বিষয়ক বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধও। কবিতার ছন্দ-প্রকরণ ও রূপকল্পের ব্যবহার বিষয়ে এই পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তাঁর তিনটি বই। এগুলো হলো: ‘বাঙলা কবিতার আধুনিকায়ন’ (১৯৯৭), ‘চিত্রকল্প ও বিচিত্র গদ্য’ (২০০৫) ও ‘বরেণ্য কবিদের নির্মাণকলা’। এই তিনটি বইয়ে রয়েছে কবিতা নির্মাণকলার ক্ষেত্রে কী প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় আধুনিকতা বাংলা কবিতায় এসেছে, তার বিশদ বিশ্লেষণ। কয়েকজন কবির মানসলোক, ছন্দ-প্রকরণ ও রূপকল্প ব্যবহারের বৈশিষ্ট্য নিয়ে ব্যাপক বিশ্লেষণ। এগুলোর কোনোটিই ব্যাকরণের ভাষায় লেখা নয়। এই প্রথম সম্পূর্ণ কবিতার ব্যাকরণধর্মী রচনায় মনোনিবেশ করলেন কবি-প্রাবন্ধিক-সমালোচক আবিদ আনোয়ার। আজ প্রকাশিত হলো ভূমিকা পর্ব।]
ভূমিকা
কবিতা ও গান রচনায় ছন্দের গুরুত্ব অপরিসীম। বাঙলায় গদ্যকবিতা প্রথম লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বৃদ্ধ বয়সে। কিন্তু রবীন্দ্রোত্তর যুগে, বিশ-শতকের তিরিশের দশকে আবির্ভূত পাঁচজন বড় কবি (যাদের আমরা ‘তিরিশি পঞ্চপ্রধান’বলে থাকি); জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বিষ্ণু দে ও অমিয় চক্রবর্তী—রবীন্দ্রনাথের শেষ বয়সে রচিত গদ্যকবিতাকে তাঁদের উত্তরাধিকার হিসেবে বেছে নেননি। তাঁরা প্রচলিত বাঙলা ছন্দের রীতিরীতিকে মান্য করেই কবিতা লিখেছেন। এই পাঁচজনের প্রধান তিনজন—জীবনানন্দ দাশ, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ও বুদ্ধদেব বসু। জীবনানন্দ দাশ ও বুদ্ধদেব বসুর গদ্যকবিতা গুনে দেখলে এর সংখ্যা হবে অতি নগণ্য। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত একটিও গদ্যকবিতা লেখেননি এবং ছন্দকেই কাব্যকৃতির একমাত্র মানদণ্ড বলে অমোঘ সত্যটি প্রকাশ করেছেন এভাবে: “আমার বিবেচনায় কবি-প্রতিভার একমাত্র অভিজ্ঞানপত্র ছন্দ-স্বাচ্ছন্দ্য, এবং মূল্যনির্ণয় যেহেতু মহাকালের ইচ্ছাধীন আর অর্থগৌরবের আবিষ্কর্তা অনাগত সমধর্মী, তাই সমসাময়িক কাব্যজিজ্ঞাসার নির্বিকল্প মানদণ্ড ছন্দোবিচার…।” তিরিশি কবিরা সম্মিলিতভাবে যে-কয়েকটি গদ্যকবিতা লিখেছেন, সেগুলোর সব যোগ দিলেও রবীন্দ্রনাথের গদ্যকবিতার সমান হবে না।
তাদের পরবর্তী প্রজন্মে আবির্ভূত বড় কবিদের মধ্যে আহসান হাবীব, ফররুখ আহমদ, সৈয়দ আলী আহসান, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, শঙ্খ ঘোষ—কেউই গদ্যরীতিকে কবিতার একমাত্র বাহন হিসেবে বেছে নেননি; বৈচিত্র্যের প্রয়োজনে কিংবা বৃদ্ধ বয়সে কেবল অস্তিত্বের জানান দিতেই অনায়াস কাব্যচর্চা হিসেবে ছিটেফোঁটা গদ্যকবিতা লিখেছেন মাত্র। শামসুর রাহমান যখন তাঁর মধ্যবয়সে একপর্যায়ে কেবল সনেট লিখলেন এবং এগুলো নিয়ে ‘মাতাল ঋত্বিক’ নামের একটি কবিতার বই বের করলেন, তখন সেকালের তরুণ কবি নাসির আহমেদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন: “সনেটে প্রত্যাবর্তন আমার একধরনের প্রতিবাদ…অনেকে অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা আমার কবিতাকে গদ্য বলে ভুল করেন…” (জনকণ্ঠ সাময়িকী, ২৩ অক্টোবর ১৯৯৬)। অতএব, শামসুর রাহমান তাঁর এই সাক্ষাৎকারে বুঝাতে চেয়েছেন—কেবলই গদ্যকবিতার চর্চা একটি ‘প্রতিবাদ’যোগ্য প্রবণতা। কবি আল মাহমুদ তাঁর একাধিক লেখা ও সাক্ষাৎকারে কবিতায় ছন্দের গুরুত্ব নিয়ে এবং নবীনদের কবিতায় গদ্যরীতির প্রাবল্য দেখে আরও স্পষ্ট ও তীব্র ভাষায় জানিয়েছেন—”যে-কবি ছন্দ জানে না, সে (কবিতার) কিছুই জানে না…” (ইনকিলাব সাহিত্য, ৩ অক্টোবর ১৯৯৭)।
বিশ-শতকের ষাটের দশকে আবির্ভূত আমাদের কবিদের মধ্যেও পাঠক-সমালোচকদের কাছে স্বীকৃত ও নন্দিত হয়েছেন তাঁরাই, যারা তাঁদের রচনাকর্মে ছন্দের অনুশাসন মেনে চলেছেন। তিরিশি কবিদের যেমন নন্দনতাত্ত্বিক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব বসু, তেমনি ষাটের দশকে তাত্ত্বিকের ভূমিকা পালন করেছেন তিনজন—হুমায়ুন আজাদ, মাহবুব সাদিক ও আবদুল মান্নান সৈয়দ। আধুনিক কবিতায় ছন্দের গুরুত্ব সম্পর্কে হুমায়ুন আজাদ লিখে গেছেন, “আগামী কালের কবি তাঁর বিষয় স্থির করবেন যত্নে, হঠাৎ-জাগা প্রেরণার প্রাবল্যে নয়…আমাদের কবিদের হাতুড়ি ঠুকতে হবে বাক্যসৃষ্টিকৌশলের ওপর….স্তবকবিন্যাসের দিকে চোখ ফেরাতে হবে…..বাঙলা কবিতায় ছন্দ (যেন) একটি অক্ষরবৃত্ত; অপর দু’টি স্বরবৃত্ত ও মাত্রাবৃত্ত শোভা: তবু ওই শোভা দু’টির কাছে যেতে হবে ঘনঘন; অক্ষরবৃত্তের ওপর চাপ বর্তমানে মারাত্মক হয়ে উঠেছে..অন্ত্যমিল সাম্প্রতিক কবিতার সর্বাধিক অবহেলিত ও অব্যবহৃত সোনা। তিরিশের কবিতায় অন্ত্যমিলের ব্যবহার হয়েছে প্রচুর, কিন্তু তারপরে এলো দুর্দিন, ফুরিয়ে গেলো দোলা…অন্ত্যমিলকে অনাধুনিক ভেবে ভয় পেয়েছিলেন অনেকে, তাই একে অবহেলা করেছেন অনেকে…অন্ত্যমিলকে পুনর্বাসিত করতে হবে…কবিতার ভাষাকে মুক্তি দিতে হবে অতি-মৌখিক বাচালতা থেকে’(আধার ও আধেয়, পৃ. ৩৬-৩৯)।
হুমায়ুন আজাদের শেষ কাব্যগ্রন্থ ‘পেরুবার কিছু নেই’ শিরোনামেই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, কবিতায় ছন্দসহ রূপকল্প নির্মাণে পেরুবার কিছু নেই। তাঁর কথার মানে হাজার বছরের বাঙলা কবিতার মৌলিক নির্মাণশৈলীর পথ ধরেই আমাদের এগোতে হবে সামনের দিকে—কেবল নতুন ভাষাভঙ্গির সন্ধানে ও কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য কিন্তু ছন্দকে অস্বীকার করে নয়। আবদুল মান্নান সৈয়দ কেবল প্রবেশলগ্নেই গদ্যকবিতা লিখেছেন ছন্দ তখনও শেখেননি বলে—এ কথা তিনি নিজেই স্বীকার করে গেছেন। দ্বিতীয় কাব্য থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ছন্দোবদ্ধ কবিতা লিখেছেন। ষাটের অন্যতম তাত্ত্বিক মাহবুব সাদিক পূর্বাপর ছন্দ রক্ষা করে কবিতা লিখেছেন এবং কবিতায় ছন্দের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রবন্ধে এখনও লিখে চলেছেন।
__________________________________________________________________
আমাদের প্রকৃত কবিরা কখনো ছন্দকে অবহেলা করেননি এবং অধুনার ছন্দ-শিক্ষিত নবীন কবিদেরও কেউ আধুনিক কবিতা মানেই গদ্যকবিতা বলে মনে করেন না; মনে করেন তারাই, যারা ছন্দ কিংবা তার বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
__________________________________________________________________
এ সম্পর্কে আশির দশকের সুব্রত অগাস্টিন গমেজ ও নব্বই-এর তপন বাগচীর ভাষ্য দিয়ে এই ভূমিকার ইতি টানব। সৃব্রত অগাস্টিন গমেজ তাঁর সতীর্থ সাজ্জাদ শরিফে সঙ্গে একমত পোষণ করতে গিয়ে উষ্মার সঙ্গে লিখেছেন, “আমাদের কবিদের ছন্দ শিখতে-শিখতে কবিতা লেখার বয়স পার হয়ে যায়…ভুল বললাম, বরং ছন্দ যে একটা শেখার মত ব্যাপার, ছন্দ মানে যে লাইনের শেষে মিল নয় এটা বুঝবার আগেই ১০-১৫টি বই বের করে প্রতিষ্ঠিত কবি হয়ে যান, আর তারপর এমনসব কথা বলেন যে, মনে হয় ছন্দ-ফন্দ সব পুরানা বস্তাপচা বিষয়, এবং আজকের আধুনিক-উত্তরাধুনিক কবিতার জন্য একটা নিষ্প্রয়োজনীয় জিনিস” (কবিসভা ২০০৪)।
নব্বই-দশকের বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক তপন বাগচী আরো বিশ্লেষণাত্মক ভাষায় প্রত্যয়ের সঙ্গে লিখেছেন, “আমাদের পাঠকসমাজে একটি কথা শোনা যায় যে, রবীন্দ্র-নজরুল-সত্যেন দত্তের পর বাংলা কবিতায় ছন্দ বিদায় নিয়েছে। ছন্দবিষয়ে অজ্ঞ নবীন কবিরাও এই বিভ্রান্তিকে সম্বল করে নিজেরা যে যেমন ইচ্ছে বাক্যের পর বাক্য লিখে এগুলোকে ‘আধুনিক’ কবিতা বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। ঘটনাটি বরং কিছুটা উল্টো। রবীন্দ্রনাথ তাঁর বৃদ্ধ বয়সে অনেক গদ্য কবিতা লিখেছেন; তিরিশি আধুনিক কবিরা পুরোনো ছন্দেই নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছেন…তিরিশি কবিরা এত অল্পই গদ্য কবিতা লিখেছেন যে, পঞ্চপ্রধানের সবগুলো যোগ দিলেও রবীন্দ্রনাথের গদ্য কবিতার সমান হবে না। কিন্তু তাঁর সময়ে ছন্দ চেনা যেতো কবিতার শরীর দেখে, এখন শরীর থেকে ছন্দ ঢুকে গেছে কবিতার অন্তরে, একে খুঁজে পান কেবল তারাই যারা ছন্দ বিষয়ে শিক্ষিত। সত্য কথা এই যে, আমাদের প্রকৃত কবিরা কখনো ছন্দকে অবহেলা করেননি এবং অধুনার ছন্দ-শিক্ষিত নবীন কবিদেরও কেউ আধুনিক কবিতা মানেই গদ্যকবিতা বলে মনে করেন না; মনে করেন তারাই, যারা ছন্দ কিংবা তার বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই জানেন না। যেকোনো যুগের কবিতায় ছন্দ ছিলো কবিতার প্রাণ এবং তা-ই থাকবে অনাগত কাল। পরিবর্তন ঘটবে কেবল প্রয়োগ-কৌশলে, যেমন ঘটিয়েছেন জীবনানন্দ দাশ, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বুদ্ধদেব বসু, শামসুর রাহমান, শক্তি-সুনীল-আল মাহমুদ তাঁদের নিজ নিজ উপায়ে।” (মুক্তমনা ও কবিসভা ২০০৬)।
অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রজন্মের কবি ও তাত্ত্বিক সুব্রত অগাস্টিন গমেজ ও তপন বাগচীর বক্তব্য দেখে এবং আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে জেনেছি, বর্তমান প্রজন্মের কবিদের অবাধ গদ্যরীতির চর্চার যুগেও অনেকেই ছন্দশিক্ষায় আগ্রহী। আমাদের বরেণ্য কবিদের সবাই ছন্দকে গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছেন এবং এখনো যারা ছন্দ শিখে কবিতা লিখতে চান, আমার উদ্দীষ্টজন কেবল তারাই।
তপন বাগচীর ভাষ্য থেকে “যেকোনো যুগের কবিতায় ছন্দ ছিল কবিতার প্রাণ এবং তা-ই থাকবে অনাগত কাল” কথাটির পুনরুল্লেখ করে এবার দৃষ্টি দিতে চাই ইউরোপীয় কবিতাঙ্গনে। এখনপর্যন্ত যাকে বলা হয় ‘কবিদের রাজা’, আধুনিক কবিতার জনক, সেই শার্ল বোদলেয়রের কবিতার একজন বিজ্ঞ বিশ্লেষক ক্যারল ক্লার্ক লিখেছেন (আমার অনুবাদে যার অর্থ দাঁড়ায়), “বিষয়বস্তুতে ও বক্তব্য উপস্থাপনায় আধুনিক হয়েও বোদলেয়র তাঁর কবিতার নির্মাণকলায় কখনো ফরাসি কবিতার প্রচলিত ছন্দ-প্রকরণকে অমান্য করেননি; সপ্তদশ শতকে প্রবর্তিত ছন্দ-প্রকরণ থেকে তিনি কখনো বিচ্যুত হন নি…এমনকি লক্ষণীয় যে, ১৮৬৬ সালে, যখন তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত এবং কিছু লিখতে অক্ষম, তখনও তাঁর ডিকটেশন দেওয়া একটি পত্রে কবিবন্ধু প্র্যাঁর-এর একটি নতুন কাব্য-সংকলনের প্রশংসা করতে গিয়ে কোনো একটি কবিতার একটি পঙ্ক্তিতে সামান্য ছন্দ-পতনের প্রতি তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ভোলেননি…অবশ্য বোদলেয়র নিজেও, যে কারণেই হোক, ১৮৬২ সালের পর সামান্যকিছু গদ্যকবিতা লিখেছেন…১৮৫৯ সালে বোদলেয়র লিখেছেন: ছন্দ ও প্রচলিত অলঙ্কারের ব্যবহার কখনো আধুনিকতার বিকাশকে রুদ্ধ করে না; বরং এর উল্টোটাই সর্বাংশে সত্য; অর্থাৎ এগুলো আধুনিকতার বিকাশে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে…।”
বোদলেয়র-প্রবর্তিত সেই আধুনিক রচনাশৈলি দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপীয় কবিতারাজ্যে এবং ১৯৩০ সালে কবিতায় নোবেল পুরস্কারজয়ী টিএস এলিয়ট ঘোষণা দেন, “পৃথিবীর যেকোনো ভাষার জন্য বোদলেয়র-এর কবিতার রচনাশৈলি হতে পারে অনুসরণীয় আদর্শ…।” টিএস এলিয়টের আগেই বোদলেয়র-এর কবিতার সংস্পর্শে এসেছিলেন আইরিশ কবি ডব্লিউ বি ইয়েটস। এরা দু’জন মিলে ইউরোপীয় আধুনিক কবিতার যে ভিত নির্মাণ করেন, তা আজও পৃথিবীব্যাপী প্রকৃত আধুনিক কবিরা রক্ষা করে চলেছেন, যেখানে ছন্দের সঙ্গে কোনো আপস করছেন না। অবশ্য সব দেশেই অমেধাবী উন্নসিকদের সংখ্যাও কম নয়। একটি অতি-উৎসাহী তরুণ সম্প্রদায় ‘উত্তরাধুনিক কবিতা’ বলে একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে চেষ্টা করে বোধগম্য নতুন কোনো দিক-নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে আন্দোলনটি মুখ থুবড়ে পড়েছে কিন্তু কথিত ‘উত্তরাধুনিকতা’র আন্দোলনেও ছন্দের প্রতি আরও বেশি বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়েছে।
ছন্দ সম্পর্কে বোদলেয়রের সেই বাণী ও কাব্যকুশলতা বাঙলা কবিতার আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায়ও অক্ষরে-অক্ষরে পালিত হয়েছে এবং হয়ে চলেছে।
চলবে…