কোবিদ
আর্ট গ্যালারিতে কোবিদ দেখল
সূর্যের গন্ধে নীল পাখি তাকায় আকাশে;
সূর্যমুখী হাঁটুভাঙ্গা ‘দ’য়ে দেখে লেগে আছে
ডানাঅলা মাটি। ধূমকেতু আর গন্ধরাজের বাড়ি গিয়ে
মৃত্যুর প্রশংসাপত্র পাঠ করে কোবিদের পোষা টিয়া।
কাঠের আত্মার লাইব্রেরিতে কোবিদ বইয়ের পৃষ্ঠা ওল্টায়
আর বিপন্ন হাতির পায়ের জুতোর ছবি তোলে।
পাহাড়ের দাঁত থেকে বের হয় চকচকে আলো।
হাজার বছরের জ্ঞান কামড়ে ধরে ঝুড়িভরা মাঠ; ডানাকাটা মহাশূন্য।
পকেট থেকে খুচরো প্রশ্ন বের হয়, লক্ষ লক্ষ উত্তর ঢুকে পড়ে
নক্ষত্র কিনতে যাওয়া বাজারের ব্যাগে। ভূমি থেকে ব্যঙ এক লাফে
উঠে যায় চাঁদে।
মহানদী কিংবা মহাসাগর অস্ত যায়, সমুদ্রমনীষী ঘুমায় সূর্যের পাড়ে।
নরকের আকাশে বাতিল ধর্মগ্রন্থের জিহবা দেখা যায়!
৪ বার কোবিদ ৪টি ধর্মে জন্ম নিয়ে ৫ম জন্মে হয় প্রশ্নকারী,
কোবিদের কাছে নাস্তিক-আস্তিকে থাকে না ফারাক।
.
চিড়িয়াখানার পথ
এই পথ চিড়িয়াখানার, এই পথ দিয়ে হেঁটে গেলে দেখা পাবে
বনমানুষের—বাঘের—হরিণের—সিংহের কিংবা বানরের।
এই পথে বাস আছে—রিক্সা আছে—পায়ে চলার গুঞ্জন আছে।
ময়ূরের নাচ আছে—হাওয়া আছে—বৃষ্টি আছে। চলো যাই চিড়িয়াখানায়।
চিড়িয়াখানায় আজ তিনি আসবেন, খুলে দেবেন সব খাঁচা। জানতে চাইবেন—
‘কে বেশি হিংস্র, তুমি নাকি সূর্যাস্তের পুকুরে হা করে থাকা বন্দি কুমির’।
আহা পঞ্চ ইন্দ্রিয় ভরা কেবলি ক্ষুধা আর ক্ষুধা!
পৃথিবীর সব হিংস্র প্রাণী রয়েছে তোমার ইন্দ্রিয়ের ভেতর।
.
সেলুন
দেশের খবর জানতে নাপিতের দোকানে যাই, সেখানে ইত্তেফাক পত্রিকা পড়ি।
ইত্তেফাকে রোজ টারজানের কমিক্স ছাপে, ওটা পড়তে ইচ্ছে হয় না— তবু দেখি।
বিচিত্র বিষয়ে নাপিতদের আলাপ শুনি। মনে হয়, দুনিয়ার বহু লোকই চুল কেটে
খেয়ে-পড়ে দিব্যি বেঁচে আছে। বিহারী নাপিতকে একদিন জিজ্ঞেস করি—
প্রতিদিন বিশ্বে কত টন চুল কাটা হয়, এই পরিসংখ্যান কি ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে?
বিহারী নাপিত হাসে আর বলে, ‘সাঁতার না জানলে বাবার পুকুরেও মানুষ ডুবে যায়’!
আমি মোবাইলে ইন্টারনেটে ঢুকি। আমার সাদা চুল কালো হয়ে যায়।
কোথা থেকে যেন ভেসে আসে টারজানের চিৎকার। সেলুনের টিভিতে টারজান হচ্ছে!
.
সংখ্যালঘু
মুসলমান পাড়ায় থাকি
ঈদই আমাদের দুর্গাপূজা।
হিন্দু পাড়ায় থাকি
দুর্গাপূজাই আমাদের ঈদ।
রাক্ষুসি নদীটা এগিয়ে আসছে।
এবারের গ্রীষ্মের ছুটিতে
মসজিদ-মন্দির দুটোই পড়বে ভেঙে!